মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৫২ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

প্রবৃত্তি অনুসরণের পরিণাম

মো. সাইফুল মিয়া:

মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার শেষ নেই। এই দুনিয়ায় ধন-সম্পত্তি ও সুনাম অর্জনের জন্য মানুষ বিরামহীন ছুটে চলে। প্রবৃত্তি অনুসরণে মানুষের অন্তরে আল্লাহর স্মরণ থেকে ক্রমে ক্রমে দূরে সরিয়ে দেয়। ফলে মানব জীবনে মহান আল্লাহর বিরুদ্ধচারণ লক্ষ করা যায়। নিচে প্রবৃত্তির অনুসরণের পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

ইমানি শক্তি হ্রাস : ইমান মুমিনের অনন্য সম্পদ। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির উপায়ও বটে। পবিত্র কোরআনের বহু জায়গায় মহান আল্লাহ স্বয়ং ইমানদারদের প্রশংসা করেছেন। ইমানদারের সম্মুখে আল্লাহর নাম নেওয়া হলে তাদের অন্তর ভীত হয় এবং তাদের ইমান বেড়ে যায়। পরিতাপের বিষয় হলো, মানুষ যখন প্রবৃত্তির অনুসরণ করে গুনাহে লিপ্তে হয় তখন ইমানি শক্তি হ্রাস পায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যভিচারী মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোনো মদ্যপায়ী মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোনো চোর মুমিন অবস্থায় চুরি করে না।’ (সহিহ বুখারি) মুমিন অবস্থায় এসব অন্যায় কাজ করে না, এর অর্থ হলো, অন্যায় কাজ করার সময় তাদের থেকে ইমানের নুর ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

কোরআনের উপদেশের উপেক্ষা : মানুষের যাবতীয় করণীয়-বর্জনীয় বিষয়াবলি পবিত্র কোরআনে লিপিবদ্ধ আছে। তারপরও মানুষ প্রবৃত্তির অনুসরণে প্রভাবিত হয়ে পবিত্র কোরআন পড়েও হেদায়াত পায় না। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আলী (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, শেষ জামানায় এক জাতি আসবে। বয়সে হবে তরুণ। বুদ্ধিতে হবে কাঁচা। তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কথা বর্ণনা করবে। কিন্তু তারা দ্বীন ও ইসলাম থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেমন ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তাদের ইমান তাদের কণ্ঠনালি ভেদ করে নিচে নামবে না।’ (সুনানে আবু দাউদ)

অন্তর নষ্ট হওয়া : দুনিয়ার সুখ ও সুখ্যাতির প্রতি অনুরাগ বৃদ্ধি পেলে মহান আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক অবনতি ঘটতে পারে। পবিত্র কোরআনের মহান আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ। অথচ আখেরাতই উৎকৃষ্টতর ও স্থায়ী।’ (সুরা আলা ১৬-১৭)

গোমরাহি : প্রবৃত্তির অনুসরণের ফলে মানুষ আস্তে আস্তে গোমরাহিতে লিপ্ত হয়ে যায়। যদি কোনো মুসলমান রাসুল (সা.)-এর আদর্শকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো আদর্শকে উত্তম মনে করে, তাহলে তার ইমান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পবিত্র কোরআনের মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি বহু জিন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় আছে, কিন্তু তারা তা দিয়ে উপলব্ধি করে না। তাদের চোখ রয়েছে, কিন্তু তারা তা দিয়ে দেখে না। তাদের কান আছে, কিন্তু তা দিয়ে তারা শোনে না। তারা হলো পশুর মতো, বরং তার চেয়েও বেশি বিভ্রান্ত। তারাই হলো গাফেল বা অমনোযোগী।’ (সুরা আরাফ ১৭৯)

বিদআতের উদ্ভব : নেক কাজের নামে দ্বীন ইসলামে নতুন কিছুর উদ্ভব ঘটানোই বিদআত। এটি মারাত্মক গুনাহ। এ গুনাহ থেকে বিরত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কমই থাকে। কারণ মানুষ সওয়াবের নিয়তে বিদআতে লিপ্ত হয়। বিদআত মানুষের বিশ্বাসে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কিছু মানুষের সামান্য পার্থিব লাভের জন্য দ্বীনকে বিক্রি করা সহজ হয়ে যায়। ফলে তারা সকালে মুমিন হয়ে সন্ধ্যায় কাফের হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনের মহান আল্লাহ বলেন, ‘তার চেয়ে কে অধিক জালেম, যে আল্লাহর ওপর মিথ্যা অপবাদ রটায় কিংবা তার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে?’ (সুরা আরাফ ৩৭)

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION